সর্বকালের সেরা পাকিস্তানি বোলারদের র্যাংকিং করা সহজ কাজ নয়, বিশেষ করে ৮০ ও ৯০-এর দশকে ক্রিকেট ইতিহাসে তাদের গভীর প্রভাবের পর। যেমন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট তাদের মানসিকতার জন্য এবং ভারতীয় ক্রিকেট কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান তৈরি করার জন্য পরিচিত, তেমনি পাকিস্তানি ক্রিকেট দ্রুতগতির বোলার তৈরির জন্য বিখ্যাত। এরা গতির, বাউন্স এবং সুইংয়ের মাধ্যমে ঐতিহাসিকভাবে ক্রিকেটে আধিপত্য বিস্তার করেছে।
সর্বকালের সেরা ১০ জন পাকিস্তানি বোলারের তালিকা:
খেলোয়াড় | ম্যাচ | উইকেট | সেরা বোলিং ফিগার | ৫ উইকেট | ১০ উইকেট |
---|---|---|---|---|---|
ওয়াসিম আকরাম | ৪৬০ | ৯১৬ | ৭/১১৯ | ৩১ | ৫ |
ওয়াকার ইউনিস | ৩৪৯ | ৭৮৯ | ৭/৩৬ | ৩৫ | ৫ |
ইমরান খান | ২৬৩ | ৫৪৪ | ৮/৫৮ | ২৪ | ৬ |
শহীদ আফ্রিদি | ৫১৮ | ৫৩৮ | ৭/১২ | ১০ | ০ |
সাকলাইন মুশতাক | ২১৮ | ৪৯৬ | ৮/১৬৪ | ১৯ | ৩ |
সাঈদ আজমল | ২১২ | ৪৪৭ | ৭/৫৫ | ১২ | ৪ |
শোয়েব আখতার | ২১৯ | ৪৩৮ | ৬/১১ | ১৬ | ২ |
উমর গুল | ২৩৭ | ৪২৭ | ৬/৪২ | ৮ | ০ |
আবদুল রাজ্জাক | ৩৩৯ | ৩৮৮ | ৬/৩৫ | ৪ | ০ |
আবদুল কাদির | ১৭১ | ৩৬৮ | ৯/৫৬ | ১৭ | ৫ |
৫. সাকলাইন মুশতাক
যখন ৮০ ও ৯০ এর দশকে পাকিস্তানের ফাস্ট বোলাররা বিশ্ব ক্রিকেটে আধিপত্য বিস্তার করছিলেন এবং তাদের গতির ঝড়ে প্রতিপক্ষকে ভয় ধরিয়ে দিচ্ছিলেন, তখন একজন বুদ্ধিমান স্পিনার সাকলাইন মুশতাক নিজের কাজটি নির্ভুলভাবে করে যাচ্ছিলেন। তিনি তার অসাধারণ স্পিন বোলিং দিয়ে পাকিস্তান ক্রিকেটে একটি অনন্য অবস্থান তৈরি করেন। সাকলাইনের বিশেষ “দুসরা” ডেলিভারি ছিল একটি চতুর অস্ত্র, যা বহু ব্যাটসম্যানকে হতবাক করেছিল। পরবর্তীতে এই কৌশলটি হরভজন সিং, রবিচন্দ্রন অশ্বিনের মতো বোলারদের জন্যও একটি মূল্যবান অস্ত্র হয়ে ওঠে। মুশতাক মাত্র ১৬৯টি ওয়ানডে খেললেও তিনি ২৮৮টি উইকেট শিকার করেন, যার মধ্যে ছয়টি পাঁচ উইকেট শিকার রয়েছে।
৪. শাহিদ আফ্রিদি
পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসে আরেকজন প্রশংসিত খেলোয়াড় হলেন শাহিদ আফ্রিদি। এই অলরাউন্ডার একসময় পাকিস্তানের সুপারস্টার হিসেবে পরিচিত ছিলেন, যিনি জাতীয় দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তার ব্যতিক্রমী স্পিন বোলিংয়ের জন্য আফ্রিদি প্রশংসিত, এবং তাকে পাকিস্তান শিবির থেকে উঠে আসা অন্যতম প্রতিভাবান খেলোয়াড় হিসেবে গণ্য করা হয়। তার স্পিন বোলিংয়ে ছিল গুগলি, দ্রুতগতির ডেলিভারি এবং মাঝে মাঝে বিপজ্জনক অফ-ব্রেক, যা ব্যাটসম্যানদের সবসময় বিভ্রান্ত করে রাখত।
৩. ইমরান খান
ওয়াসিম আকরাম ও ওয়াকার ইউনিসের প্রতিভা আবিষ্কারকারী নেতা, অধিনায়ক এবং খেলোয়াড় ইমরান খান পাকিস্তানের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী এবং নিঃসন্দেহে সেরা বোলিং অলরাউন্ডার। তিনি ২১ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন এবং ১৯৯২ সালে পাকিস্তানকে আইসিসি ওডিআই বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন। ইমরানের বোলিং দক্ষতা বিশেষ করে তার রিভার্স-সুইং ইয়র্কারের জন্য বিখ্যাত, যা ৮০’র দশকের মাঝামাঝি সময়ে তাকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা এনে দেয়। তার দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ইমরান খান ২৬৩টি ম্যাচ খেলেছেন এবং ২৪টি পাঁচ উইকেট শিকারের মাধ্যমে ৫৪৪টি উইকেট নিয়েছেন, যদিও সেসময় সাদা বলের ক্রিকেট ততটা জনপ্রিয় ছিল না।
২. ওয়াকার ইউনুস
ওয়াসিম আকরামের সঙ্গে পাকিস্তানের ভয়ংকর পেস বোলিং জুটি গড়ে তোলা ওয়াকার ইউনুস জাতীয় দলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। ১৯৮৯ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক করা ইউনুস সুইং এবং টো-ক্রাশিং ইয়র্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে সমান দক্ষ ছিলেন। চোটের কারণে পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে তিনি সমস্যায় ছিলেন, তবে টেস্ট ও ওডিআই মিলিয়ে ৩৪৯টি ম্যাচ খেলে ২৩.৭০ গড়ে ৭৮৯টি উইকেট সংগ্রহ করেছেন।
১. ওয়াসিম আকরাম
ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বকালের সেরা বাঁহাতি পেস বোলার হিসেবে পরিচিত, ওয়াসিম আকরামকে সর্বশ্রেষ্ঠ সুইং বোলার হিসেবে গণ্য করা হয়। ১৯ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্রিকেট খেলেছেন আকরাম, যেখানে তিনি গতি, আক্রমণাত্মক মনোভাব এবং অপ্রতিদ্বন্দ্বী দক্ষতার মাধ্যমে ব্যাটসম্যানদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছিলেন। তিনি ৩৫৬টি ওডিআই ম্যাচে অংশ নিয়ে ৫০২টি উইকেট নিয়েছেন এবং ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ পাঁচ উইকেট নেওয়ার তালিকায় ১০ম স্থানে রয়েছেন।