বিশ্বের সেরা ১০ জন ওপেনিং ব্যাটসম্যান

বিশ্বের সেরা ১০ জন ওপেনিং ব্যাটসম্যান

ওপেনাররা সাধারণত নিজের উইকেট রক্ষা এবং দলের জন্য একটি শক্ত ভিত্তি গড়ার জন্য সাবধানে খেলতেন। কিন্তু ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপে সনাথ জয়াসুরিয়া তার আক্রমণাত্মক ব্যাটিং দিয়ে এই ধারাটি বদলে দেন। তিনি দেখিয়েছিলেন যে ওপেনাররা খেলার শুরুতেই বড় শট খেলতে পারে, ফিল্ডিং সীমাবদ্ধতার সুযোগ নিয়ে। এতে ওপেনারের সংজ্ঞা এবং সেরা ওপেনারের ধারণা পরিবর্তিত হয়।

বিশ্বের সেরা ১০ জন ওপেনিং ব্যাটসম্যানের তালিকা:

র‍্যাংকনামআন্তর্জাতিক ম্যাচরানদেশ
শচীন তেন্ডুলকার৬৬৪৩৪৩৫৭ভারত
সনাথ জয়াসুরিয়া৫৮৬২১০৩২শ্রীলঙ্কা
ম্যাথিউ হেইডেন২৭৩১৫০৬৬অস্ট্রেলিয়া
রোহিত শর্মা৪৭১১৮৭১৮ভারত
ডেভিড ওয়ার্নার৩৭৬১৮৮১৭অস্ট্রেলিয়া
হাশিম আমলা৩৪৯১৮৬৭২দক্ষিণ আফ্রিকা
অ্যাডাম গিলক্রিস্ট৩৯৬১৫৪৬১অস্ট্রেলিয়া
অ্যালাস্টার কুক২৫৭১৫৭৩৭ইংল্যান্ড
বীরেন্দ্র সেওয়াগ৩৭৪১৭২৫৩ভারত
১০ক্রিস গেইল৪৮৩১৯৫৯৩ওয়েস্ট ইন্ডিজ

১০. ক্রিস গেইল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

ক্রিস গেইল, যিনি “ইউনিভার্স বস” নামে পরিচিত, বড় শট মারার জন্য বিশেষভাবে বিখ্যাত, বিশেষ করে টি২০ ম্যাচে। তিনি দলের প্রয়োজন অনুযায়ী সাবধানী এবং আক্রমণাত্মক দু’ধরনের ব্যাটিং করতে পারতেন। তার নিবেদন এবং দক্ষতা তাকে ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ওপেনার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

ফরম্যাটম্যাচ ইনিংস রান সর্বোচ্চ স্কোর১০০৫০
টেস্ট১০৩১৮২৭২১৫৩৩৩১৫৩৭
ওডিআই৩০১২৯৪১০৪৮০২১৫২৫৫৪
টি২০আই৭৯৭৫১৮৯৯১১৭১৪

৯. বীরেন্দ্র সেহওয়াগ (ভারত)

বীরেন্দ্র সেহওয়াগ ছিলেন একজন সাহসী এবং নির্ভীক ক্রিকেটার, যিনি টেস্ট ম্যাচে ওপেনিং ব্যাটসম্যানদের খেলার ধারা পাল্টে দিয়েছিলেন। তিনি আক্রমণাত্মক স্টাইলে খেলতেন এবং এমন ঝুঁকি নিতেন যা অন্যরা নেওয়ার সাহস করত না। তার তীক্ষ্ণ নজর ও দ্রুত প্রতিক্রিয়া তাকে এমন শট খেলতে সক্ষম করেছিল যা অনেক খেলোয়াড় কল্পনাও করত না। তার দ্রুত রান করার ক্ষমতা ম্যাচের শুরুতেই বোলারদের ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করত।

ফরম্যাটম্যাচইনিংসরানসর্বোচ্চ স্কোর১০০৫০
টেস্ট১০৪১৮০৮৫৮৬৩১৯২৩৩২
ওয়ানডে২৫১২৪৫৮২৭৩২১৯১৫৩৮
টি২০আই১৯১৮৩৯৪৬৮

৮. অ্যালেস্টার কুক (ইংল্যান্ড)

অ্যালেস্টার কুক ছিলেন একজন মনোযোগী এবং ধৈর্যশীল ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিত। টেস্ট ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের প্রধান ভরসার খেলোয়াড় ছিলেন তিনি। দীর্ঘ সময় ধরে ক্রিজে টিকে থাকার অসাধারণ দক্ষতার কারণে তিনি ইংল্যান্ডকে বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ জিততে সহায়তা করেছেন, যা তাকে ক্রিকেটের কিংবদন্তি করে তুলেছে।

ফরম্যাটম্যাচইনিংসরানসর্বোচ্চ স্কোর১০০৫০
টেস্ট১৬১২৯১১২৪৭২২৯৪৩৩৫৭
একদিনের৯২৯২৩২০৪১৩৭১৯
টি-২০আই৬১২৬

৭. অ্যাডাম গিলক্রিস্ট (অস্ট্রেলিয়া)

তার বিধ্বংসী ওপেনিং ব্যাটিং দিয়ে তিনি উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানের ভূমিকার এক নতুন সংজ্ঞা তৈরি করেন। কয়েক ওভারের মধ্যেই ম্যাচের গতি পরিবর্তন করার ক্ষমতা তাকে প্রতিপক্ষ অধিনায়কদের জন্য এক দুঃস্বপ্নে পরিণত করেছিল। তার খেলার ন্যায্যতা এবং খেলোয়াড়সুলভ মনোভাব তার ক্রিকেটিং দক্ষতার মতোই প্রশংসনীয় ছিল।

ফরম্যাটম্যাচ ইনিংসরান সর্বোচ্চ স্কোর১০০৫০
টেস্ট৯৬১৩৭৫৫৭০২০৪১৭২৬
একদিনের২৮৭২৭৯৯৬১৯১৭২১৬৫৫
টি২০আই১৩১৩২৭২৪৮

৬. হাশিম আমলা (দক্ষিণ আফ্রিকা)

আমলার ক্লাসিকাল টেকনিক এবং কব্জির দক্ষতায় খেলা তার ব্যাটিংকে দেখার জন্য খাঁটি ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য এক অনন্য আনন্দের উৎস ছিল। ঝুঁকি না নিয়েই দ্রুত রান করার তার অসাধারণ ক্ষমতা তাকে বিশেষ করে তুলেছে। সব ফরম্যাট এবং পরিস্থিতিতে ধারাবাহিকতা ধরে রেখে আমলা দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং অর্ডারের মেরুদণ্ড হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।

ফরম্যাটম্যাচইনিংসরানসর্বোচ্চ স্কোর১০০ ৫০
টেস্ট১২৪২১৫৯২৮২৩১১২৮৪১
ওডিআই১৮১১৭৮৮১১৩১৫৯২৭৩৯
টি-২০আই৪৪৪৪১২৭৭৯৭

৫. ডেভিড ওয়ার্নার (অস্ট্রেলিয়া)

একজন আগ্রাসী বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান, যিনি টি-টোয়েন্টি বিশেষজ্ঞ থেকে সফলভাবে তিন ফরম্যাটের ওপেনারে রূপান্তরিত হয়েছেন। ওয়ার্নারের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শৈলী এবং প্রথম বল থেকেই প্রতিপক্ষকে চাপে রাখার ক্ষমতা তাকে সবসময় বিপজ্জনক করে তোলে। তার ফিল্ডিং দক্ষতা এবং মাঠে তার উদ্যম তার ব্যাটিং পারফরম্যান্সকে আরও মূল্যবান করে তোলে।

ফরম্যাটম্যাচইনিংসরানসর্বোচ্চ স্কোর১০০ ৫০
টেস্ট১০৯১৯৯৮৪৮৭৩৩৫২৫৩৬
ওয়ানডে১৬১১৫৯৬৯৩২১৭৯২২৩৩
টি-২০আই৯৯৯৯২৮৯৪১০০২৪

৪. রোহিত শর্মা (ভারত)

তার সুন্দর শট নির্বাচন ও ইনিংস গড়ার ক্ষমতার জন্য রোহিত শর্মা পরিচিত। আধুনিক ওয়ানডে ক্রিকেটের একজন দিকপাল হিসেবে তিনি পরিচিতি লাভ করেছেন। বড় সেঞ্চুরি করার দক্ষতা এবং স্পিন ও পেস উভয়ের বিপক্ষে স্বচ্ছন্দে খেলা তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে। শর্মার নেতৃত্বের গুণাবলী তার অসাধারণ ক্যারিয়ারে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

ফরম্যাটম্যাচইনিংসরান সর্বোচ্চ স্কোর১০০ ৫০
টেস্ট১০৯১৯৯৮৪৮৭৩৩৫২৫৩৬
ওডিআই১৬১১৫৯৬৯৩২১৭৯২২৩৩
টি২০আই৯৯৯৯২৮৯৪১০০২৪

৩. ম্যাথু হেডেন (অস্ট্রেলিয়া)

ম্যাথু হেডেন ছিলেন ওপেনিং অর্ডারে একটি প্রভাবশালী শক্তি। তার শারীরিক উপস্থিতি দিয়ে তিনি বোলারদের ভয় দেখাতেন। দ্রুত ও ধারাবাহিকভাবে রান করার দক্ষতার কারণে তিনি অস্ট্রেলিয়ার সোনালী যুগের একজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হয়ে ওঠেন। বিশেষ করে উপমহাদেশীয় পরিস্থিতিতে স্পিনারদের বিপক্ষে তার সুইপ শট ব্যবহারের দক্ষতা ছিল অসাধারণ।

ফরম্যাটম্যাচইনিংসরানসর্বোচ্চ স্কোর১০০৫০
টেস্ট১০৩১৮৪৮৬২৫৩৮০৩০২৯
ওডিআই১৬১১৫৫৬১৩৩১৮১১০৩৬
টি-২০৩০৮৭৩

২. সানথ জয়সুরিয়া (শ্রীলঙ্কা)

ওডিআইতে প্রথম ১৫ ওভারে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে ওপেনারের ভূমিকা বিপ্লবিত করেন। বলের শক্তিশালী স্ট্রাইকার হিসেবে, জয়সুরিয়া এককভাবে ম্যাচের গতিপথ পরিবর্তন করতে পারতেন। তার অলরাউন্ড দক্ষতা তাকে ১৯৯০ ও ২০০০ এর দশকে শ্রীলঙ্কার সাফল্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় করে তুলেছিল।

ফরম্যাটম্যাচইনিংসরানসর্বোচ্চ স্কোর১০০৫০
টেস্ট১১০১৮৮৬৯৭৩৩৪০১৪৩১
ওডিআই৪৪৫৪৩৩১৩৪৩০১৮৯২৮৬৮
টি২০আই৩১৩০৬২৯৮৮

১. শচীন টেন্ডুলকার (ভারত)

শচীন টেন্ডুলকার, যাকে “ক্রিকেটের দেবতা” বলা হয়, বল মারতে অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন। ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি ক্রিকেট খেলেছেন এবং প্রায় সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন। ব্যাটিংয়ে তিনি এতটাই দক্ষ ছিলেন যে তিনি অনেক রেকর্ড ভেঙেছেন এবং বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

ফরম্যাটম্যাচইনিংসরানসর্বোচ্চ স্কোর১০০৫০
টেস্ট২০০৩২৯১৫৯২১২৪৮৫১৬৮
ওডিআই৪৬৩৪৫২১৮৪২৬২০০৪৯৯৬
টি-২০আই১০১০
Also Read: IPL – ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে অধিনায়কদের মধ্যে ৫ জন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *