১৯৮৩ বিশ্বকাপে কপিল দেবের ১৭৫ রানের অসাধারণ ইনিংস এবং ভারতের ঐতিহাসিক জয়
১৯৮৩ বিশ্বকাপে ভারতের পারফরম্যান্স
১৯৮৩ সালে ভারত প্রথমবারের মতো ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয় করেছিল। এই জয় শুধুমাত্র ক্রিকেট ইতিহাসেই নয়, বরং ভারতের ক্রীড়া ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ফাইনালে, কপিল দেবের নেতৃত্বে ভারত শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পরাজিত করে। এই জয় ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্রিকেটারদের অনুপ্রাণিত করেছিল এবং দেশের ক্রিকেট অবকাঠামো উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিল। এছাড়া, এটি স্পনসরশিপ বৃদ্ধি, দর্শকসংখ্যার বৃদ্ধি এবং ক্রিকেটকে ভারতে একটি লাভজনক শিল্পে রূপান্তর করতে সহায়ক ছিল। ভারতের এই ঐতিহাসিক জয়ের কাহিনী পরবর্তীতে “১৯৮৩” নামে একটি চলচ্চিত্রে চিত্রায়িত হয়।
Read More:- একটি আইপিএল মৌসুমে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীর পরিচয় নির্ধারণ
১৯৮৩ বিশ্বকাপে ভারতের ম্যাচ ফলাফল
তারিখ | প্রতিপক্ষ | ভেন্যু | ফলাফল | মার্জিন |
---|---|---|---|---|
৯ জুন | ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ম্যানচেস্টার | জয় | ৩৪ রানে |
১১ জুন | জিম্বাবুয়ে | লেস্টার | জয় | ৫ উইকেটে |
১৩ জুন | অস্ট্রেলিয়া | নটিংহাম | পরাজয় | ১৬২ রানে |
১৫ জুন | ওয়েস্ট ইন্ডিজ | দ্য ওভাল | পরাজয় | ৬৬ রানে |
১৮ জুন | জিম্বাবুয়ে | টুনব্রিজ ওয়েলস | জয় | ৩১ রানে |
২০ জুন | অস্ট্রেলিয়া | চেমসফোর্ড | জয় | ১১৮ রানে |
২২ জুন | ইংল্যান্ড (সেমিফাইনাল) | ম্যানচেস্টার | জয় | ৬ উইকেটে |
২৫ জুন | ওয়েস্ট ইন্ডিজ (ফাইনাল) | লর্ডস | জয় | ৪৩ রানে |
১৯৮৩ বিশ্বকাপে ভারত বনাম জিম্বাবুয়ে – একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ
ভারত ১৯৮৩ বিশ্বকাপের যাত্রা শুরু করেছিল শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩৪ রানে পরাজিত করে। এরপর ৫ উইকেটে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে, অস্ট্রেলিয়ার কাছে ১৬২ রানে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৬৬ রানে পরাজিত হয়।
দুইটি পরাজয়ের পর, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটি জিততেই হতো। টুনব্রিজ ওয়েলসে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচটি ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে ওঠে।
ভারত প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৭ রানে ৫ উইকেট হারায়। ওপেনার সুনীল গাভাস্কার এবং কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত রানশূন্য আউট হন। এরপরে মহিন্দর অমরনাথ (৫), সন্দীপ পাটিল (১), এবং যশপাল শর্মা (৯) মিলিয়ে মাত্র ১৫ রান করেন।
এরপর অধিনায়ক কপিল দেব অবিশ্বাস্য এক ইনিংস খেলেন। ১৭ রানে ৫ উইকেটের অবস্থায় ব্যাট করতে নেমে কপিল ১৭৫ রানে অপরাজিত থাকেন। তার ইনিংসে ছিল ১৬টি চার এবং ৬টি ছক্কা। উইকেটরক্ষক সৈয়দ কিরমানি ২৪ রান করে তাকে সঙ্গ দেন।
ভারত ৬০ ওভারে ২৬৬ রান তোলে। জবাবে জিম্বাবুয়ে ৫৭ ওভারে ২৩৫ রানে অলআউট হয়। মদনলাল ৩টি, রজার বিনি ২টি এবং কপিল দেব, বলবিন্দর সান্ধু ও মহিন্দর অমরনাথ একটি করে উইকেট নেন।
বিশ্বকাপে এক ইনিংসে সর্বাধিক রান
খেলোয়াড় | রান | প্রতিপক্ষ | স্থান | বছর |
---|---|---|---|---|
মার্টিন গাপটিল | ২৩৭* | ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ওয়েলিংটন | ২০১৫ |
ক্রিস গেইল | ২১৫ | জিম্বাবুয়ে | ক্যানবেরা | ২০১৫ |
গ্যারি কার্স্টেন | ১৮৮* | আরব আমিরাত | রাওয়ালপিন্ডি | ১৯৯৬ |
সৌরভ গাঙ্গুলি | ১৮৩ | শ্রীলঙ্কা | টন্টন | ১৯৯৯ |
ভিভ রিচার্ডস | ১৮১ | শ্রীলঙ্কা | করাচি | ১৯৮৭ |
ডেভিড ওয়ার্নার | ১৭৮ | আফগানিস্তান | পার্থ | ২০১৫ |
কপিল দেব | ১৭৫* | জিম্বাবুয়ে | টুনব্রিজ ওয়েলস | ১৯৮৩ |
বীরেন্দ্র সেহওয়াগ | ১৭৫ | বাংলাদেশ | মিরপুর | ২০১১ |
কপিল দেবের ১৭৫ রানের ইনিংসটি তার ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ স্কোর এবং ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের মধ্যে প্রথম ওডিআই সেঞ্চুরি। এটি সেই সময়ের সর্বোচ্চ ওডিআই স্কোরও ছিল।
ভারত বনাম জিম্বাবুয়ে ১৯৮৩ বিশ্বকাপ ম্যাচ সারাংশ
ম্যাচ সারাংশ: ভারত বনাম জিম্বাবুয়ে | টুনব্রিজ ওয়েলস, ১৯৮৩ বিশ্বকাপ |
---|---|
ভারত | ২৬৬-৮ (৬০ ওভার) |
কপিল দেব | ১৭৫* (১৩৮ বল) |
পিটার রাউসন | ৩-৪৭ |
সৈয়দ কিরমানি | ২৪ (৫৬ বল) |
কেভিন কারান | ৩-৬৫ |
জিম্বাবুয়ে | ২৩৫-১০ (৫৭ ওভার) |
কেভিন কারান | ৭৩ (৯৩ বল) |
মদনলাল | ৩-৪২ |
ভারত এই ম্যাচটি ৩১ রানে জিতে নেয়।
বিশ্বকাপে ভারতের যাত্রার এক ঝলক
বছর | ফলাফল |
---|---|
১৯৭৫ | গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় |
১৯৭৯ | গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় |
১৯৮৩ | চ্যাম্পিয়ন |
১৯৮৭ | সেমিফাইনাল |
১৯৯২ | রাউন্ড রবিন পর্যায়ে ৭ম স্থান |
১৯৯৬ | সেমিফাইনাল |
১৯৯৯ | সুপার সিক্স |
২০০৩ | রানারআপ |
২০০৭ | গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় |
২০১১ | চ্যাম্পিয়ন |
২০১৫ | সেমিফাইনাল |
২০১৯ | সেমিফাইনাল |
২০২৩ সালে ভারত নিজেদের মাটিতে তৃতীয় বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নামবে।
Read More:- টেস্ট ক্রিকেটে দ্রুততম 8000 রান করা কে?