টেস্ট ক্রিকেটে ফলো-অন কী?
টেস্ট ক্রিকেটে ফলো-অন একটি কৌশলগত নিয়ম যা প্রথম ইনিংসে বিশাল লিড অর্জনকারী দল প্রয়োগ করতে পারে। যদি প্রথমে ব্যাট করা দল দ্বিতীয় দলের চেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে (সাধারণত ২০০ বা তার বেশি) রান করে, তবে প্রথম দলের অধিনায়ক ফলো-অন চাপানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এতে দ্বিতীয় দলকে তাদের প্রথম ইনিংসের পরপরই আবার ব্যাট করতে হয়। ফলো-অন নিয়ম খেলার গতি বাড়ায় এবং পাঁচ দিনের মধ্যে ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণের সম্ভাবনা বাড়ায়।
উদাহরণস্বরূপ, যদি টিম “এ” তাদের প্রথম ইনিংসে ৪৫০ রান করে এবং টিম “বি” শুধুমাত্র ২০০ রান করতে পারে, তবে টিম “এ” ফলো-অন প্রয়োগ করতে পারে, যার ফলে টিম “বি”কে আবার ব্যাট করতে হবে।
Read More:- ক্রিকেট ব্যাট: সমস্ত পথের নির্দেশিকা
ফলো-অন নিয়ম এবং এর গুরুত্ব
যে দলের অধিনায়ক প্রথমে ব্যাট করেছে, তিনিই ফলো-অন প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এই সিদ্ধান্ত সাধারণত তখনই আসে, যখন দলটি সুবিধাজনক অবস্থানে থাকে এবং ম্যাচ দ্রুত শেষ করতে চায়। ফলো-অন প্রয়োগের উদ্দেশ্য হলো ড্র হওয়ার সম্ভাবনা কমানো।
এই নিয়ম সাধারণত টেস্ট এবং ডোমেস্টিক ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে দেখা যায়। এই ফরম্যাটে দলগুলো সাধারণত দুইবার ব্যাট করে, এবং ম্যাচ জেতার জন্য অন্তত তিনটি ইনিংস সম্পন্ন হওয়া প্রয়োজন।
ফলো-অন প্রয়োগের নিয়ম
ক্রিকেটের আইন ১৪ অনুযায়ী, ফলো-অন প্রয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় লিড ম্যাচের সময়কাল অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়।
- পাঁচ দিনের টেস্টে ফলো-অন প্রয়োগের জন্য ২০০ রানের লিড প্রয়োজন।
- চার দিনের ডোমেস্টিক ম্যাচ (যেমন রঞ্জি ট্রফি)-এ ১৫০ রানের লিড যথেষ্ট।
- দুই দিনের ম্যাচে লিড কমে ১০০ রানে দাঁড়ায়।
- এক দিনের ম্যাচে লিডের প্রয়োজন মাত্র ৭৫ রান।
আইন ১৪.১.৩ অনুযায়ী, যদি বহু দিনের ম্যাচের প্রথম দিন বৃষ্টির কারণে পুরোপুরি ধুয়ে যায়, তবে প্রয়োজনীয় লিড সমন্বয় করা হবে।
ফলো-অন প্রয়োগের পরও পরাজয়
ফলো-অন প্রয়োগ করেও কিছু ম্যাচে দল পরাজিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ:
- ১৮৯৪ সালে, সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়া ২৬১ রানের লিড নিয়েও ইংল্যান্ডের কাছে ১০ রানে হেরে যায়।
- ১৯৮১ সালে, হেডিংলিতে অস্ট্রেলিয়া ২২৭ রানের লিড নিয়েও ইংল্যান্ডের কাছে ১৮ রানে হেরে যায়।
- ২০০১ সালে, ইডেন গার্ডেনে অস্ট্রেলিয়া ২৭৪ রানের বিশাল লিড নিয়েও ভারতের কাছে হেরে যায়।
- ২০২৩ সালে, বেসিন রিজার্ভে ইংল্যান্ড ২২৬ রানের লিড নিয়েও নিউজিল্যান্ডের কাছে পরাজিত হয়।
টেস্ট ক্রিকেটে “ট্রেইল” অর্থ কী?
টেস্ট ক্রিকেটে “ট্রেইল” শব্দটি বোঝায় একটি দল প্রথম ইনিংসে প্রতিপক্ষ দলের চেয়ে কত রান পিছিয়ে আছে। উদাহরণস্বরূপ, যদি টিম “এ” তাদের প্রথম ইনিংসে ৩০০ রান করে এবং টিম “বি” ২৫০ রান করে, তবে বলা হয় টিম “বি” ৫০ রানে “ট্রেইল” করছে।
সাধারণ প্রশ্নোত্তর
৫৭৮ রানের ক্ষেত্রে ফলো-অন স্কোর কী?
যদি একটি দল তাদের প্রথম ইনিংসে ৫৭৮ রান করে, তবে ফলো-অন স্কোর হবে ৫৭৮ – ২০০ = ৩৭৮ রান।
ফলো-অন এড়াতে ২১০ রানে কত প্রয়োজন?
যদি ফলো-অন স্কোর ২১০ হয়, তবে দলটিকে ফলো-অন এড়াতে প্রথম ইনিংসে অন্তত ৪১০ রান করতে হবে।
৪৮০ রানে ফলো-অন এড়ানোর জন্য কত প্রয়োজন?
যদি ফলো-অন স্কোর ৪৮০ হয়, তবে দলটিকে প্রথম ইনিংসে অন্তত ২৮০ রান করতে হবে।
১১০ রানে ফলো-অন এড়ানোর জন্য কত প্রয়োজন?
যদি ফলো-অন স্কোর ১১০ হয়, তবে দলটিকে অন্তত ৩১০ রান করতে হবে।
১৪০ রানে ফলো-অন এড়ানোর জন্য কত প্রয়োজন?
যদি ফলো-অন স্কোর ১৪০ হয়, তবে দলটিকে অন্তত ৩৪০ রান করতে হবে।
৪৬৯ রানের ক্ষেত্রে ফলো-অন নিয়ম কী?
যদি একটি দল ৪৬৯ রান করে, তবে ফলো-অন মার্জিন হবে ৪৬৯ – ২০০ = ২৬৯ রান। অর্থাৎ, প্রতিপক্ষ দলকে অন্তত ২৭০ রান করতে হবে ফলো-অন এড়ানোর জন্য।
ক্রিকেটের সর্বশেষ খবর, টিপস এবং বিশ্লেষণ পেতে সংযুক্ত থাকুন 24cric.com-এ।
Read More:- শীর্ষ 10: ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা কভার ড্রাইভ খেলোয়াড় (আপডেট 2024)