আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মহেন্দ্র সিং ধোনির সেরা ৫টি ইনিংস

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মহেন্দ্র সিং ধোনির সেরা ৫টি ইনিংস

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মহেন্দ্র সিং ধোনির সেরা ৫ ইনিংসের মাধ্যমে তার অসাধারণ প্রতিভার পরিচয় মেলে। রোমাঞ্চকর ম্যাচ ফিনিশিং থেকে শুরু করে অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন—ধোনির এই আইকনিক পারফরম্যান্সগুলো ক্রিকেট ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে। ক্যাপ্টেন কুলের প্রতিভা দেখুন সেই মুহূর্তগুলোতে, যা সময়ের পাতায় অমর হয়ে আছে। ধোনির সেরা ইনিংসগুলোতে উপভোগ করুন ক্রিকেটের সর্বোচ্চ শ্রেষ্ঠত্ব।

মহেন্দ্র সিং ধোনির আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেরা ৫ ইনিংস:

ম্যাচপ্রতিপক্ষফরম্যাটবছরস্কোর
বিশ্বকাপ ফাইনালশ্রীলঙ্কাওডিআই২০১১৯১*
প্রথম টেস্টইংল্যান্ডটেস্ট২০১৩২২৪
প্রথম ওডিআইপাকিস্তানওডিআই২০১২১১৩*
দ্বিতীয় ওডিআইইংল্যান্ডওডিআই২০১৭১৩৪
তৃতীয় ওডিআইশ্রীলঙ্কাওডিআই২০০৫১৮৩*

5. মহেন্দ্র সিং ধোনির, ৩য় ওয়ানডে

২০০৫ সালে, ভারতের জয়পুরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এক ম্যাচে এমএস ধোনি তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ স্কোর করেন। শ্রীলঙ্কা প্রথমে ব্যাট করে ২৯৮/৪ রানের চ্যালেঞ্জিং টার্গেট দেয়। তখন এত বড় লক্ষ্য তাড়া করা সহজ ছিল না। ভারতের ইনিংস শুরুতেই শচীন টেন্ডুলকার আউট হলে, ধোনিকে তিন নম্বরে ব্যাট করতে পাঠানো হয়। ধোনি এরপর থেকেই পুরো ইনিংসের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। তিনি অসাধারণ ব্যাটিং করে ১৪৫ বলে অপরাজিত ১৮৩ রান করেন, যেখানে ছিল ১০টি ছক্কা এবং ১৫টি চার। এটি এখনও ওয়ানডেতে কোনো উইকেটকিপারের সর্বোচ্চ স্কোর। ভারত ৪৬.১ ওভারে ৩০৩/৪ রান করে ম্যাচটি জিতে নেয়।

4. মহেন্দ্র সিং ধোনির, ২য় ওয়ানডে

২০১৭ সালে ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যে একটি ওডিআই ম্যাচে মহেন্দ্র সিং ধোনি অসাধারণ এক ইনিংস খেলেছিলেন। ভারতের শুরুটা ভালো হয়নি, তবে ধোনি এবং যুবরাজ সিং মিলে একটি দারুণ পার্টনারশিপ করে ম্যাচের গতি বদলে দেন। তারা একসঙ্গে ২৫৬ রান যোগ করেন এবং দুজনেই সেঞ্চুরি করেন। যুবরাজ ১৫০ রান করে আউট হলেও, ধোনি তার দুর্দান্ত ব্যাটিং চালিয়ে যান। তিনি ১২২ বলে ১৩৪ রান করেন, যেখানে ছিল ছয়টি ছক্কা এবং দশটি চার। ভারতের দল ম্যাচটি ১৫ রানে জিতে নেয়, আর ধোনির এই ইনিংস তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা হিসেবে পরিচিত।

3. মহেন্দ্র সিং ধোনির, ১ম ওয়ানডে

ওডিআই ক্রিকেটে মহেন্দ্র সিং ধোনি সাত নম্বরে ব্যাট করে দুটি সেঞ্চুরি করে ইতিহাস গড়েছেন। এর মধ্যে একটি স্মরণীয় সেঞ্চুরি ছিল ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তানের বিপক্ষে চেন্নাইয়ে। এটি ছিল ভারতের মাটিতে পাকিস্তানের সর্বশেষ দ্বিপাক্ষিক সিরিজ।

পাকিস্তান টস জিতে বোলিং নেওয়ার পর ভারতের শুরুটা খুবই খারাপ হয়েছিল। মাত্র ৯.৪ ওভারে ২৯ রানে ভারতের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যান আউট হয়ে যান। এর পর ধোনি সূরেশ রায়নার (৪৩) সঙ্গে ৭৩ রানের পার্টনারশিপ এবং পরে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের (৩১*) সঙ্গে অপরাজিত ১২৫ রানের জুটি গড়েন। ধোনি ১২৫ বলে ৭ চার এবং ৩ ছক্কায় অপরাজিত ১১৩ রান করে ভারতকে ২২৭/৬ রানে নিয়ে যান।

2. মহেন্দ্র সিং ধোনির, ১ম টেস্ট

ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক ও উইকেটকিপার এমএস ধোনি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২২৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে টেস্টে তার সর্বোচ্চ স্কোর গড়েন। এই ইনিংসটি তিনি এমন এক সময়ে খেলেছিলেন যখন ভারত ৩৮০ রানে পিছিয়ে ছিল এবং স্কোর ছিল ১৯৬/৪। ধোনি বিরাট কোহলির সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে ১২৮ রানের গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ গড়েন।ধোনি অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন এবং ২৪টি বাউন্ডারি ও ৬টি ছক্কা হাঁকান। তার অসাধারণ ইনিংস ভারতের প্রথম ইনিংসে ১৯৮ রানের লিডে বড় ভূমিকা রাখে, যা শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জয়ের পথ তৈরি করে দেয়।

1. মহেন্দ্র সিং ধোনির, বিশ্বকাপ ফাইনাল

২০১১ সালে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ফাইনালে একটি ছক্কা মেরে এমএস ধোনি ভারতের দ্বিতীয় ওডিআই বিশ্বকাপ জয় নিশ্চিত করেন। এটি ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম স্মরণীয় মুহূর্ত। শ্রীলঙ্কা প্রথমে ব্যাট করে মাহেলা জয়বর্ধনের অপরাজিত ১০৩ রানের উপর ভর করে ২৮৪/৬ স্কোর করে।

ভারত শুরুতে চাপে পড়ে যায়, কারণ শচীন তেন্ডুলকর (১৮) এবং বীরেন্দ্র সেহওয়াগ (০) দ্রুত আউট হয়ে যান। এরপর গৌতম গম্ভীর ও বিরাট কোহলি (৩৫) গুরুত্বপূর্ণ ৮৩ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। ধোনি, নিজেকে যুবরাজ সিং এবং সুরেশ রায়নার আগে প্রমোট করে, গম্ভীরের সঙ্গে ১০৯ রানের পার্টনারশিপ করেন। ধোনির ৭৯ বলে অপরাজিত ৯১ রান, যেখানে ছিল আটটি চার এবং দুটি ছক্কা, ভারতের স্কোরকে ৪৮.২ ওভারে ২৭৭/৪-এ নিয়ে যায় এবং বিশ্বকাপ ফাইনালের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের ইতিহাস তৈরি করে।

Also read: বিরাট কোহলি বনাম শচীন টেন্ডুলকার পরিসংখ্যান

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *