ক্রিকেটে অতিরিক্ত রান হলো প্রতিপক্ষের বলের ভুলের কারণে ব্যাটিং দলের স্কোরে যোগ হওয়া রান। এটি কোনো নির্দিষ্ট ব্যাটসম্যানের স্কোর নয়, বরং বোলার বা ফিল্ডারের কারণে হওয়া ভুলের ফলাফল। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের এমন বেশ কয়েকটি ম্যাচ আছে যেখানে এক ইনিংসে তারা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অতিরিক্ত রান সংগ্রহ করেছে। নিচে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে এক ইনিংসে সর্বাধিক অতিরিক্ত রান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
Read More:- বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেটে ক্ষুদ্রতম জয়ের রেকর্ড (রানের ব্যবধানে)
টেস্ট ক্রিকেটে এক ইনিংসে বাংলাদেশের সর্বাধিক অতিরিক্ত রানের তালিকা
দল | স্কোর | ওভার | অতিরিক্ত | বাই | লেগ বাই | ওয়াইড | নো বল | রান রেট | ইনিংস | বিপক্ষ দল | মাঠ | তারিখ |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
বাংলাদেশ | 333 | 91.0 | 39 | 17 | 8 | 3 | 11 | 3.65 | ২ | ভারত | চট্টগ্রাম | ১৭ ডিসেম্বর ২০০৪ |
বাংলাদেশ | 468 | 126.0 | 39 | 10 | 11 | 2 | 16 | 3.71 | ১ | জিম্বাবুয়ে | হারারে | ৭ জুলাই ২০২১ |
বাংলাদেশ | 331 | 115.4 | 35 | 1 | 11 | 8 | 15 | 2.86 | ২ | জিম্বাবুয়ে | হারারে | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ |
বাংলাদেশ | 191 | 45.4 | 34 | 8 | 9 | 1 | 16 | 4.18 | ২ | শ্রীলঙ্কা | কলম্বো (PSS) | ২০ সেপ্টেম্বর ২০০৫ |
বাংলাদেশ | 319 | 91.5 | 33 | 11 | 4 | 3 | 15 | 3.47 | ১ | শ্রীলঙ্কা | চট্টগ্রাম | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ |
১. ভারতের বিপক্ষে ২০০৪ সালে চট্টগ্রাম টেস্ট
২০০৪ সালের চট্টগ্রাম টেস্টে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ ৩৩৩ রান সংগ্রহ করে। এই ইনিংসে তারা ৩৯ রান অতিরিক্ত পায়, যার মধ্যে ১৭টি ছিল বাই, ৮টি লেগ বাই, ৩টি ওয়াইড, এবং ১১টি নো বল। বোলারদের অনিয়ন্ত্রিত বোলিং এবং ফিল্ডিং ত্রুটির কারণে এই অতিরিক্ত রান সংগ্রহ সম্ভব হয়েছিল।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ(BPL) 2025 live score
২. জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০২১ সালে হারারে টেস্ট
২০২১ সালের হারারে টেস্টে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ৪৬৮ রান সংগ্রহ করে। এই ইনিংসে ৩৯ রান ছিল অতিরিক্ত, যেখানে ১০টি বাই, ১১টি লেগ বাই, ২টি ওয়াইড, এবং ১৬টি নো বল ছিল। এটি বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ইনিংস ছিল যেখানে অতিরিক্ত রান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৩. জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০০৪ সালে হারারে টেস্ট
২০০৪ সালের হারারে টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ ৩৩১ রান সংগ্রহ করে। এই ইনিংসে ৩৫ রান অতিরিক্ত ছিল। বিশেষ করে বোলারদের নো বল (১৫টি) এবং ওয়াইড (৮টি) বেশি হওয়ার কারণে এই অতিরিক্ত রান আসে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়াম লিগ (BPL) 2025 পয়েন্ট টেবিল
৪. শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০০৫ সালে কলম্বো টেস্ট
২০০৫ সালের কলম্বো টেস্টে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে স্কোর ছিল ১৯১ রান, যার মধ্যে ৩৪ রান অতিরিক্ত। এখানে নো বল (১৬টি) এবং বাই (৮টি) প্রধান ভূমিকা রাখে।
৫. শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০০৬ সালে চট্টগ্রাম টেস্ট
২০০৬ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ৩১৯ রান সংগ্রহ করে। এই ইনিংসে ৩৩ রান অতিরিক্ত আসে। নো বল এবং বাই-এর মাধ্যমে প্রতিপক্ষ দল অনেক রান দিয়ে ফেলে।
আজকের বিপিএল ম্যাচের ভবিষ্যদ্বাণী, প্রতিকূলতা, লাইভ স্কোর
অতিরিক্ত রান কিভাবে দলের পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলে?
অতিরিক্ত রান টেস্ট ক্রিকেটে একটি দলকে উল্লেখযোগ্য সুবিধা দিতে পারে। এটি এমন একটি এলাকা যেখানে প্রতিপক্ষ বোলার এবং ফিল্ডারদের ত্রুটির সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যাটিং দল তাদের স্কোর বাড়াতে পারে। উপরোক্ত ম্যাচগুলোতে বাংলাদেশের অতিরিক্ত রানগুলো তাদের ইনিংসের মোট স্কোর বাড়িয়ে দিয়েছিল এবং ম্যাচের ফলাফলে প্রভাব ফেলেছিল।
উপসংহার
বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে এক ইনিংসে অতিরিক্ত রান তাদের ব্যাটিং শক্তি এবং প্রতিপক্ষের বোলিং ত্রুটির মিশ্রণকে প্রতিফলিত করে। এই অতিরিক্ত রানগুলো কখনো কখনো ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ দল তাদের এই ইতিবাচক দিককে আরও উন্নত করে তুলতে পারে।
Read More:- বাংলাদেশের টি২০ ক্রিকেটে ক্ষুদ্রতম জয়গুলো (রানের ব্যবধানে)
প্রশ্নোত্তর
বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে এক ইনিংসে সর্বাধিক অতিরিক্ত রান কত?
বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে এক ইনিংসে সর্বাধিক অতিরিক্ত রান হলো ৩৯, যা দুবার অর্জিত হয়েছে—২০০৪ সালে ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রামে এবং ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারেতে।
২০০৬ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ কত অতিরিক্ত রান পেয়েছিল?
২০০৬ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ ৩৩ রান অতিরিক্ত পেয়েছিল।
২০০৫ সালের কলম্বো টেস্টে বাংলাদেশের অতিরিক্ত রান কীভাবে এসেছিল?
২০০৫ সালের কলম্বো টেস্টে বাংলাদেশের ৩৪ অতিরিক্ত রান এসেছিল প্রধানত নো বল (১৬টি) এবং বাই (৮টি) থেকে।