আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বিতর্কিত এবং সমালোচিত ১০ জন ক্রিকেটারের তালিকা আবিষ্কার করুন, যারা তাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, মাঠের আচরণ এবং বিভেদমূলক ব্যক্তিত্বের জন্য পরিচিত। আক্রমণাত্মক কর্মকাণ্ড থেকে শুরু করে বিতর্কিত মন্তব্য পর্যন্ত, এরা ভক্তদের কাছ থেকে বিশ্বব্যাপী তীব্র প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন। জানুন কেন এই ক্রিকেটাররা খেলাধুলার জগতে একদিকে জনপ্রিয় এবং অন্যদিকে কুখ্যাত।
10. গৌতম গম্ভীর (ভারত)
গৌতম গম্ভীর মাঠে প্রায়ই উত্তপ্ত মুহূর্তের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতেন। তার আক্রমণাত্মক মনোভাবের জন্য তিনি পরিচিত ছিলেন। তবে এই মনোভাব তাকে অনেক সমালোচকের লক্ষ্যবস্তু করে তুলেছিল, বিশেষ করে ক্রিকেটের সবচেয়ে শান্ত স্বভাবের খেলোয়াড় রাহুল দ্রাবিড়ের সঙ্গে এক উল্লেখযোগ্য বিতর্কের পর। জয়ের প্রতি তার প্রবল আকাঙ্ক্ষা অনেক সময় খেলাধুলার স্পিরিটকে ছাপিয়ে যেত, যার ফলে কখনো কখনো নিজের ভক্তদের কাছ থেকেও সমালোচনা পেয়েছেন।
9. মাইকেল ক্লার্ক (অস্ট্রেলিয়া)
মাইকেল ক্লার্ক, সাবেক অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক, শুধুমাত্র তার ক্রিকেট দক্ষতার জন্যই নয়, মাঠে তার আগ্রাসী আচরণের জন্যও পরিচিত ছিলেন। প্রতিপক্ষকে স্লেজিং করা এবং তাদের উপর মানসিক চাপ তৈরি করার অভ্যাস তাকে অনেকের চোখে অনスポোর্টসম্যানলাইক বা খেলার চেতনার বাইরে বলে পরিচিত করে তোলে। ২০০৩ সালে শচীন টেন্ডুলকারের সঙ্গে তার বিখ্যাত স্লেজিং এবং অন্যান্য বিরোধ তাকে সমালোচকদের নজরে আরও বেশি এনে দেয়।
8. রাসেল আর্নল্ড (শ্রীলঙ্কা)
প্রাক্তন শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যান রাসেল আর্নল্ড প্রায়ই তার বিতর্কিত মাঠের আচরণের কারণে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন। ২০০২ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সৌরভ গাঙ্গুলির সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা এই ধরনের একটি প্রধান উদাহরণ। তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে পিচের উপর হাঁটার অভিযোগ করা হয়েছিল। তার এমন আচরণ প্রায়ই প্রতিপক্ষের সঙ্গে বিরোধের সৃষ্টি করত, যা অনেকের কাছে তাকে অপছন্দনীয় ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছিল।
7. রিকি পন্টিং (অস্ট্রেলিয়া)
রিকি পন্টিং, অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সফল অধিনায়ক, সমালোচকদের অভাব ছিল না। তার লড়াকু শৈলীর জন্য পরিচিত পন্টিং প্রায়ই বিতর্কিত কৌশল অবলম্বন করতেন, যেমন ভুয়া আউটের আবেদন করা এবং প্রতিপক্ষকে স্লেজিং করা। এসব কাজ ভক্ত এবং সহ-খেলোয়াড়দের মধ্যে সমালোচনা সৃষ্টি করেছিল এবং তাকে বিরোধিতাকারীদের তালিকায় যুক্ত করেছিল।
6. অলি রবিনসন (ইংল্যান্ড)
ওলি রবিনসন ২০২৩ অ্যাশেজ সিরিজের সময় একটি বিতর্কিত ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। এজবাস্টনে উসমান খাজাকে আউট করার পর তার আক্রমণাত্মক বিদায় ভঙ্গি ভক্ত ও বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। এর পাশাপাশি, প্রাক্তন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক রিকি পন্টিং সম্পর্কে তার মন্তব্য বিতর্ককে আরও উস্কে দেয়, যা পন্টিং এবং বিশ্বব্যাপী ক্রিকেট ভক্তদের সমালোচনার কারণ হয়ে ওঠে।
5. মিসবাহ-উল-হক (পাকিস্তান)
মিসবাহ-উল-হক, একজন সম্মানিত অধিনায়ক এবং ব্যাটসম্যান হওয়া সত্ত্বেও, তার নিজ দেশের সমর্থকদের সমালোচনার মুখে পড়েছেন। তার রক্ষণাত্মক খেলার ধরণ তাকে প্রায়ই ওয়ানডে ইন্টারন্যাশনাল (ODI)-এ পাকিস্তানের ব্যর্থতার জন্য দায়ী করা হয়েছে। ২০০৭ সালের আইসিসি ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টির ফাইনালে একটি ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলার সিদ্ধান্ত, যা পাকিস্তানের ভারতের কাছে পরাজয়ের কারণ হয়, তার বিরুদ্ধে ঘৃণার আগুন আরও বাড়িয়ে দেয়।
4. হার্শেল গিবস (দক্ষিণ আফ্রিকা)
হার্শেল গিবস একজন প্রতিভাবান ক্রিকেটার হলেও, তাকে প্রধানত ম্যাচ ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার জন্য মনে রাখা হয়। তার এই কর্মকাণ্ড দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটের সুনাম ক্ষুণ্ন করেছিল এবং ব্যাপক সমালোচনা কুড়িয়েছিল। এছাড়া, তার স্লেজিং ঘটনার জন্যও তিনি ভক্তদের কাছ থেকে আরও দূরে সরে যান, যা তাকে অনেকের কাছে অপ্রিয় ব্যক্তিত্বে পরিণত করে।
3. সালমান বাট (পাকিস্তান)
সালমান বাট, যিনি একসময় পাকিস্তানের অধিনায়ক ছিলেন, ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ চলাকালীন ম্যাচ ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার জন্য কুখ্যাত। তার এই কর্মকাণ্ড পাকিস্তান ক্রিকেটের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে এবং সারা বিশ্বের ভক্তদের কাছ থেকে চিরস্থায়ী বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। খেলার প্রতি তার অবজ্ঞা এবং দেশের সম্মানহানির জন্য তিনি ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম ঘৃণিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত।
2. লু ভিনসেন্ট (নিউজিল্যান্ড)
লু ভিনসেন্ট, নিউজিল্যান্ডের প্রাক্তন ব্যাটসম্যান, একাধিক ম্যাচ ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েন, যার মধ্যে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগও রয়েছে। তার এই কার্যকলাপ নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের জন্য লজ্জার কারণ হয় এবং বিশ্বজুড়ে ভক্তদের তার বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ করে তোলে। তার সুনাম আর কখনোই পুনরুদ্ধার হয়নি, এবং তিনি ক্রিকেট জগতের একটি অপছন্দের চরিত্র হিসেবে থেকে গেছেন।
1. এমএস ধোনি (ভারত)
ভারতের অন্যতম সফল অধিনায়ক হওয়া সত্ত্বেও, মহেন্দ্র সিং ধোনির কিছু সমালোচক রয়েছে। কিছু ভক্ত তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন যে, তিনি সিনিয়র খেলোয়াড়দের যেমন সৌরভ গাঙ্গুলী, রাহুল দ্রাবিড়, এবং সেবাগকে দলের বাইরে পাঠিয়েছেন, আবার কিছু জন তাকে বিদেশি টেস্ট ম্যাচগুলিতে তার পারফরম্যান্স নিয়ে সমালোচনা করেছেন। যদিও তিনি বিশ্বব্যাপী সম্মানিত, ধোনি তার নিজ দেশের কিছু অংশ থেকে অব্যাখ্যেয় ঘৃণার সম্মুখীন হয়েছেন।