আইপিএলের ইতিহাসে শীর্ষ ম্যাচ ফিক্সিং দল

আইপিএল (ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ) বছর ধরে ম্যাচ-ফিক্সিং অভিযোগের সম্মুখীন হয়েছে, যা তার খ্যাতিকে প্রভাবিত করেছে। রাজস্থান রয়্যালস এবং চেন্নাই সুপার কিংসের মতো দলগুলো প্রায়শই ফিক্সিং কেলেঙ্কারি সাথে যুক্ত হয়েছে, তবে কোন একক দলকে “নম্বর ১ ফিক্সার” হিসেবে স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। এই বিতর্কগুলো লীগটির সাধারণত উদযাপিত ক্রিকেট বিনোদনের উপর ছায়া ফেলেছে।

আইপিএল ২০২৪: ম্যাচ ফিক্সিং পরিস্থিতি

আইপিএল ২০২৪-এ, ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (BCCI) অ্যান্টি-করাপশন ইউনিট (ACU) ম্যাচ ফিক্সিংয়ের সমস্যা সমাধান করছে। ACU রাজস্থান রয়্যালসের ম্যাচের সঙ্গে সম্পর্কিত দুটি ভেন্যুতে ম্যাচ বুকিদের গ্রেফতার করেছে, যা টুর্নামেন্টের সততা রক্ষার এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতিকে গুরুত্ব দেয়।

আইপিএল ইতিহাসের ম্যাচ-ফিক্সিং কেলেঙ্কারি

আইপিএল, ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেট লিগ, ম্যাচ-ফিক্সিং কেলেঙ্কারির জন্য আলোচিত হয়েছে বহুবার। ২০১৩ সালের ম্যাচ-ফিক্সিং কেলেঙ্কারি ছিল সবচেয়ে বড়, যখন কিছু গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় এবং দলের কর্মকর্তারা ফিক্সিং ও স্পট-ফিক্সিংয়ের সাথে যুক্ত হয়েছিলেন। এই কেলেঙ্কারি ক্রিকেট দুনিয়াকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল এবং আইপিএলের খ্যাতি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছিল।

বিশ্ববিদ্যালয় খেলোয়াড়, রাজস্থান রয়্যালস’র শ্রীশান্ত, অজিত চন্দিল্লা, এবং কৃষ্ণপাল সিংসহ কয়েকজন খেলোয়াড়কে এর সাথে যুক্ত করা হয়েছিল। ফলস্বরূপ, শ্রীশান্ত ও তার সতীর্থদের দীর্ঘ সময়ের জন্য ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত করা হয়েছিল। এই ঘটনাগুলি আইপিএলের বিশ্বস্ততা এবং এর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে।

বছরঘটনাবিস্তারিত
২০১৩স্পট-ফিক্সিং কেলেঙ্কারি৩টি রাজস্থান রয়্যালস (আরআর) খেলোয়াড় (শ্রীসন্থ, অজিত চন্দিলা, এবং আঙ্কিত চাভান) স্পট-ফিক্সিংয়ের জন্য গ্রেফতার হন।
২০১৩স্পট-ফিক্সিং কেলেঙ্কারিফলস্বরূপ- ৭ বছরের নিষেধাজ্ঞা (যা সুপ্রিম কোর্ট দ্বারা কমানো হয়) এবং চন্দিলার জন্য আজীবন নিষেধাজ্ঞা।
২০১৫চেন্নাই সুপার কিংস ও রাজস্থান রয়্যালস নিষিদ্ধচেন্নাই সুপার কিংস এবং রাজস্থান রয়্যালসকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় দলের কর্মকর্তাদের অবৈধ বাজির কারণে।
২০১২স্টিং অপারেশনআন্ডারক্যাপড খেলোয়াড়দের স্পট-ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেওয়ার সময় আন্ডারকভার অপারেশনে ধরা পড়ে।
২০১২স্টিং অপারেশনফলস্বরূপ- লিগ দুর্নীতি, ব্ল্যাক মানি পেমেন্ট এবং আন্ডারকভার অপারেশন নিয়ে তদন্ত শুরু করে।
২০১৯পাকিস্তানি সূত্রে গ্রেফতারগ্রেফতারগুলি ম্যাচ-ফিক্সিংয়ের চলমান হুমকির পরিচায়ক।

রাজস্থান রয়্যালস

ম্যাচ ফিক্সিং সংবাদে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে রাজস্থান রয়্যালস সকল সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়দের স্থগিত করেছে। দলটি একটি বিবৃতিতে বলেছে, “আমাদের লিগের সততা বজায় রাখতে সুনির্দিষ্টভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদের দৃঢ় পদক্ষেপগুলি আমাদের একটি সৎ আইপিএল নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করে। আমরা খেলাধুলার মূল্যবোধ রক্ষা করতে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

মহেন্দ্র সিং ধোনি

২০১৯ সালে, ধোনি জানিয়েছিলেন যে, চেন্নাই সুপার কিংসের সাসপেনশন এবং নিষেধাজ্ঞা ছিল তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং সময়গুলোর মধ্যে, এবং তিনি নিজেকে গভীরভাবে হতাশাগ্রস্ত বলে বর্ণনা করেছিলেন। তিনি মন্তব্য করেছিলেন যে, ম্যাচ ফিক্সিং কেবল তখনই হতে পারে, যখন অনেক খেলোয়াড় এবং টিমমেট একযোগভাবে এতে যুক্ত হয়।

দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল

২০১৬ এবং ২০১৭ মৌসুমে ম্যাচ ফিক্সিং কেলেঙ্কারির কারণে রাজস্থান রয়্যালস এবং চেন্নাই সুপার কিংস আইপিএল থেকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিল। এই ঘটনা ভারতের ক্রিকেটে একটি বড় ধরনের বিতর্কের সৃষ্টি করে এবং আইপিএলের সুনামকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

বছরইভেন্টবিস্তারিত
২০১৩অবৈধ বাজি কেলেঙ্কারিচেন্নাই সুপার কিংসের গুরুনাথ মেয়াপ্পান এবং রাজস্থান রয়্যালসের রাজ কুন্দ্রা অবৈধ বাজিতে জড়িত ছিলেন।
২০১৫নিষেধাজ্ঞা জারিসিএসকে ও আরআর দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়।
২০১৬-২০১৭বিকল্প দল আইপিএলে অংশগ্রহণরাইজিং পুনে সুপারজায়ান্ট এবং গুজরাট লায়ন্স আইপিএলে খেলেছিল।
২০১৮নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রত্যাবর্তনচেন্নাই সুপার কিংস এবং রাজস্থান রয়্যালস তাদের মূল নামে আইপিএলে ফিরে আসে।
২০১৮আরপিএস ও গুজরাট লায়ন্স বিলুপ্তবিকল্প দল দুটি নিষিদ্ধকরণ শেষে ভেঙে দেওয়া হয়।

আইপিএল সিজন ২০১৮

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ম্যাচ ফিক্সিং এবং বুকি কেলেঙ্কারির কারণে একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। যদিও সুপ্রিম কোর্ট প্রথমে তিনটি খেলোয়াড় সহ শ্রীরেশান্ত কে নিষিদ্ধ করেছিল। তবে প্রমাণের অভাবে পরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। এই ঘটনা গুলির পর আইপিএল গভর্নিং বডি আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যাতে লিগের সততা এবং জনপ্রিয়তা বজায় থাকে।

আইপিএল সিজন ২০১৩

এই মৌসুমটি ছিল নানা বিতর্ক ও ম্যাচ-ফিক্সিংয়ের অভিযোগে পরিপূর্ণ, যার ফলে চেন্নাই সুপার কিংস (CSK) এবং রাজস্থান রয়্যালস (RR) সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ হয়। যদিও খেলোয়াড় এবং CSK-এর মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, কোনো আদালতই চূড়ান্তভাবে দলগুলোকে ম্যাচ-ফিক্সিং বা স্পট-ফিক্সিংয়ের জন্য দোষী সাব্যস্ত করেনি।

ইভেন্টমুম্বাই ইন্ডিয়ান্স (MI)চেন্নাই সুপার কিংস (CSK)
স্কোর148/9 (20 ওভার)125/9 (20 ওভার)
টসমুম্বাই ইন্ডিয়ান্স জিতেছে
ফলাফলমুম্বাই ইন্ডিয়ান্স জিতেছে ২৩ রানে
সেরা পারফরমার (MI)কায়রন পোলার্ড – 60 রান (32 বল)
সেরা পারফরমার (CSK)এমএস ধোনি – 63 রান (45 বল)

Also Read: সর্বকালের সেরা ১০ বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *